বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বছরে লন্ডনভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্ত আর্টস উদ্যাপন করতে যাচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী ভাটিয়ালি সংগীতের উৎসব। বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম উপাদান ভাটিয়ালিগান এবং তাঁর ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করে ‘A week for bhatiali of Bengal’ শিরোনামে ভাটিয়ালি উৎসবে ভাটিয়ালির পাশাপাশি থাকবে ছয়টি প্রবন্ধ প্রকাশনা এবং উপস্থাপন সেই সঙ্গে থাকবে ভাটিয়ালিগানকে উপজীব্য করে চিত্রকলা, সংগীত এবং ভাটিয়ালিগানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিয়ে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিল্ম প্রদর্শনী এবং ভাটিয়ালির পরিবেশনা।
ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল লটারি হেরিটেজ ফান্ডের সহযোগিতায় ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় শুরু হওয়া ভার্চ্যুয়াল এই ভাটিয়ালি ফেস্টের উদ্বোধন করবেন লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটের এক্সিকিউটিভ মেয়র জন বিগস। সেই সঙ্গে তিনি মোড়ক উন্মোচন করবেন আমাদের অনলাইন পাবলিকেশন ‘ভাটিয়ালি’–র।
জন বিগসের উদ্বোধনী বক্তব্যের পরে বাংলাদেশের অন্যতম লোকগবেষক ড. সাইমন জাকারিয়া অনলাইন ম্যাগাজিন ‘ভাটিয়ালি’তে তাঁর প্রকাশিতব্য প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। সবশেষে অবারিত বাংলার অন্যতম ভাটিয়ালি এবং বলিউড ফিল্মে ভাটিয়ালির প্রভাব বিষয়ে সাংগীতিক উপস্থাপনা করবেন এই মুহূর্তে দুই বাংলার অন্যতম লোকসংগীতশিল্পী প্রাণেশ সোম এবং ইংল্যান্ডের অনাবাসী শিল্পী নবরূপা মুখার্জি।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ৩০ এপ্রিল লন্ডন সময় বিকেল চারটায় থাকছে ব্রিটিশ বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তীর আঁকা একটি চিত্রকর্মের ওপর ভিত্তি করে ভাটিয়ালিরর গল্প এবং গানে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সোশ্যাল মিডিয়া প্রদর্শনী।
উৎসবের তৃতীয় দিন, অর্থাৎ ১ মে বিকেল চারটায় থাকছে লোকসংগীতশিল্পী এবং লেখক গুরুপ্রসাদ হোম চৌধুরী ও হুমায়ুন আজম রেওয়াজের লেখা দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপনার সঙ্গে ভাটিয়ালির উপস্থাপনা। সেই সঙ্গে থাকবে লন্ডনে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের দুজন শিল্পী শুচিস্মিতা মৈত্র ও বর্ষা চৌধুরীর সঙ্গে বাংলা, বাংলাদেশ এবং ভাটিয়ালি নিয়ে গল্প ও গান। সবশেষে থাকবে বর্তমান শান্তিনিকেতনে শিক্ষারত বাংলাদেশি তরুণ শিল্পী রিপন সরকারের পরিবেশনা।
উৎসবের চতুর্থ দিনে, অর্থাৎ ২ মে বিকেল চারটায় থাকছে বাংলাদেশের তরুণ লোকগবেষক ও লেখক সুমনকুমার দাশের লেখা প্রবন্ধের উপস্থাপনা এবং গান-গল্প। সেই সঙ্গে থাকবে ওপার বাংলার তরুণ এবং জনপ্রিয় শিল্পী ঋষি চক্রবর্তীর কণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের সাংগীতিক উপস্থাপনা।
উৎসবের শেষ দিন ৩ মে বিকেল চারটায় থাকছে বাংলাদেশের প্রথিতযশা লোকগবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের লেখা প্রবন্ধের উপস্থাপনা এবং সেই সঙ্গে লন্ডনের জনপ্রিয় শিল্পী অমিত দের কণ্ঠে ভাটিয়ালির মূর্ছনা।
মুক্ত আর্টসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সংগঠনটির ক্রিয়েটিভ ডাইরেক্টর অসীম চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মুক্ত আর্টস বিলেতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ এবং উপস্থাপনের কাজ করে যাচ্ছে। এর আগে আমরা কাজ করেছি মনসামঙ্গল, নৌকাবাইচ এবং দোল উৎসব নিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভাটিয়ালি হলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের রত্নভান্ডারের অন্যতম একটি রত্ন, যা অবহেলা–অনাদরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের স্বনামধন্য লেখক–গবেষকদের লেখায় এবং সংগীত ও চিত্রশিল্পের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলার প্রাচীন ভাটিয়ালির ঐতিহ্য এবং সাংগীতিক প্রকাশকে উপস্থাপন করতে চাই বহুভাষিক বিশ্বসংস্কৃতির শহর লন্ডনে।’