পূর্ব লন্ডনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করলো মুক্ত আর্টস

বিশ্বের হাজারো সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্র ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে কাব্য, সাহিত্য এবং সংগীতেী মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে বরণ করেছে মুক্ত আর্টস।

‘বহুত্ববাদ উৎসবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন’-স্লোগানকে সামনে রেখে লন্ডনের পপলার ইউনিয়ন অডিটোরিয়ামে গত শনিবার উদযাপিত বাংলা নবর্বষের আয়োজনে ছিল দুই বাংলা প্রবাসী বাঙালিদের সাথে ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মেলবন্ধন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন মুক্ত আর্টসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং সংস্কৃতিজন সত্যব্রত দাস স্বপন। এরপর সুরালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিলো মনোমুগ্ধকর বৈশাখ বন্ধনা এবং বাংলাদেশের লোকগান। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মঞ্চে আসেন ব্রিটিশ সংগীত শিল্পী গ্যারি কোগলান।
তার কণ্ঠে জন ডেনিভারের “কান্ট্রি রোড টেক মি হোম’ অথবা ষাটের দশকের তুমুল জনপ্রিয় গান “ইফ ইউ মিস দ্য ট্রেইন আই এম অন ” মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে হল ভর্তি দর্শকদের। এরপর বাংলা কবিতা এবং সংগীতের যুথবদ্ধ পরিবেশনা “নব আনন্দে জাগো” পরিবেশনা করেন বিলেতের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী গৌরী চৌধুরী, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সংগীত বিষয়ে গবেষণারত নন্দিতা মুখার্জি এবং আবৃত্তিশিল্পী দীপ রয়।

অনুষ্ঠানের সব শেষে ছিলো বাংলা কীর্তন। মধ্যযোগীয় শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনের অন্যতম পর্ব রাস কীর্তনকে উপজীব্য করে অসীম চক্রবর্তীর লেখা কীর্তনালেখ্যঃ রাসগীতি পূর্ণতা এনেছে মুক্ত আর্টসের নববর্ষ উৎসবমঞ্চে।হল ভর্তি দর্শক ভ্রমণ করেছেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাচীন উপাদান বাংলা কীর্তনের সুরমাধুর্যে । যে সুরের ধারাবাহিকতায় বাংলা পেয়েছে বিদ্যাপতি, বড়ু চন্ডিদাস গোবিন্দদাস থেকে শুরুকরে লালন ফকির, হয়ে বাঙালির প্রাণের মানুষ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ কিংবা ভাটির গীতিকবি বাউল আব্দুল করিমকে।

সুবাস দাসের মঞ্চ পরিকল্পনায় কীর্তন আলেখ্য রাসগীতি পরিবেশন করেছেন মুক্ত আর্টসের শিল্পীরা যাদের মধ্যে বিলেতে হিন্দুস্থানী সেমি ক্ল্যাসিকেল সংগীতের তরুণ শিল্পী এবং মুক্ত আর্টসের সদস্য অমিত দে, বিলেতের জনপ্রিয় শিল্পী লাবনী বড়ুয়া, অঙ্গিরা মুখার্জি, নতুন প্রজন্মের প্রতিভাধর শিল্পী ময়ূখ চক্রবর্তী, শ্রী হিরণ্ময় গোস্বামী, রিজোয়ান এবং অমি ইসলাম।

বাংলা নববর্ষের এই বর্ণিল আয়োজন নিয়ে মুক্ত আর্টসের সংগঠক এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ডক্টর অসীম চক্রবর্তী বলেন, দুঃখজনক ভাবে আমরা এখনো আসলে ধর্ম, বর্ন, শ্রেণী, পেশা সহ নানান বিভেদের বেড়াজালে আবদ্ধ। একমাত্র সংস্কৃতিই পারে এই অচলায়তনকে ভাঙতে। প্রতিটা আয়োজনের মতো আমাদের এই আয়োজনেও আমরা চেষ্টা করেছি বাংলা সংস্কৃতির উদযাপনের মাধ্যমে ভিন্ন মতের মানুষদের একত্রিত করতে। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আবারো প্রমান করছে আমাদের সাংস্কৃতিক শক্তির সক্ষমতা।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

Logo of Bangladesh Pratidin

Others media’s news